মগের প্রিন্টটা উঠে যাচ্ছে। ২০৩৬ সালের বায়োটেক কনফারেন্সের কুচকুচে কালো কফি মগটা ডক্টর রাশেদের খুব প্রিয়। তিনি সাধারনত এই মগে কফি খান, আজকে চা খাচ্ছেন।

মন্টুর এতক্ষনে বাজার থেকে চলে আসার কথা, খবরের কাগজটাও আজকে দিয়ে যায়নি কেন যেন। কাপে থাকা অবশিষ্ট চা থেকে সামান্য একটু চা একটা স্লাইডে নিয়ে বাকীটা ফেলে মাইক্রোস্কোপে চোখ দিলেন। চায়ের এই স্পিসিস তার আবিস্কার করা। সাধারনত চা সমতল ভুমিতে হয়না, কিন্তু এই স্পিসিস সমতল ভুমিতে হবে। ২২ সালের গ্রেট গ্লোবাল এগ্রিকালচার ডিক্লাইনের পর তার এরকম অনেক আবিস্কার আস্তে আস্তে অনেক ফসল ফিরিয়ে আনতে পেরেছে।

“চাচাজান, একটা লোক আসছে আপনার সাথে দেখা করতে”, ডক্টর রাশেদ খেয়ালই করেননি কখন মন্টু বাসায় চলে এসেছে।

"আলুর স্যম্পল নিয়ে আসছো মন্টু?"

মন্টু কোন জবাব না দিয়ে চুপ করে দাড়িয়ে থাকলো।

"আচ্ছা পরের দিন আনতে ভুলো না। একটু খিচুরী রান্না করতে পারবা?"

জে আচ্ছা।

কিছুক্ষন পর মন্টু আবার ফিরে আসলো, “চাচাজান, লোকটা বলে অনেক জরুরী দরকার আপনাকে”

আচ্ছা বসতে বলো, আমি যাচ্ছি।

ডক্টর রাশেদের লিভিং রুম অন্য সবার লিভিং রুমের মত না। ঘর ভর্তি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। রুমের ছাদে বিভিন্ন রংয়ের এলইডি লাইট, ঠিক টাইম করে রং পরিবর্তন করে। সুর্যের আলোর পরিবর্তে এগুলো গাছগুলোকে বাচিয়ে রাখে। তার বাসায় সাধারনত কেও আসেনা। ডক্টর রাশেদও খুব একটা বাইরে যান না। বাজার করা, বাসা দেখাশোনা করা সব মন্টুই করে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রফেসর হিসেবে স্বেচ্ছায় অবসর নেয়ার পর থেকে শীতাকুন্ডের এই বাসাটাতেই তিনি ল্যবরেটরী বানিয়ে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন প্রায় পুরো বাসাটাই তার ল্যবরেটরী, এমনকি লিভিং রুমটাও। ডক্টর রাশেদ লিভিং রুমে ঢুকে দেখতে পেলেন ৩০-৩২ বছর বয়সের একজন রুমের একমাত্র সোফায় বসে আছেন। একটা ধবধবে সাদা শার্ট আর কালো ফরমাল প্যান্ট পড়া। দেখে মনে হচ্ছে এই শার্ট এর আগে পড়া হয়নি, খোজাখুজি করলে হয়ত দোকানের লেবেলও পাওয়া যেতে পারে । ডক্টর রাশেদকে দেখে উনি দাড়িয়ে গেলেন।

“আসসালামু আলাইকুম স্যার, আমাকে আপনি চিনবেন না”

“আপনি আর্মিতে আছেন?”, ডক্টর রাশেদ বসতে বসতে বললেন।

২০২০ সালের প্যন্ডেমিকের সময় থেকেই লিভিং রুমে একটা এক্সট্রা চেয়ার রাখেন ডক্টর রাশেদ। মানুষ থেকে দুরে বসার জন্য। সেই দুরে বসার অভ্যাসটা রয়েই গেছে। দুরে বসলে আরেকটা সুবিধা হচ্ছে মানুষকে সহজে পর্যবেক্ষন করা যায়।

লোকটা একটু অবাক হয়ে জিগ্গেস করলো, “জ্বী: লেফট্যনেন্ট কর্নেল আসাদ, আপনি কিভাবে বুঝলেন?”

“বুটটা খুলে আসতে ভুলে গেছেন”, ডক্টর রাশেদ মুচকি হাসলেন।

“কফি খাবেন? আজকে আমার সকালে কফি খাওয়া হয়নি। মাথাটা ধরে আছে”,

আসাদ : “কফি? মানে…”

ড: রাশেদ: “সারা দুনিয়াতে বিলুপ্ত হয়ে গেলেও আমার গ্রীন হাউসে আছে। আর জেনেটিকালি মডিফাই করে আমি যেই নতুন স্পিসিস তৈরী করেছি সেটা প্রতি দুই সপ্তাহে হার্ভেস্ট করা যায়”

আসাদ : হ্যা খাবো। ভুলেই গেছি কফির স্বাদ।

ডক্টর রাশেদ হালকা জোর গলায় বললেন, “মন্টু উনার জন্য একটা এসপ্রেসো আর আমার জন্য একটা নাইট্রোজেন কফি”, মন্টু শুনলে কিনা বুঝতে পারা গেলনা।

ড:রাশেদ: তো আমার কাছে কি প্রয়োজনে আসা? আর্মির সাথে তো আমি বান্দরবানের অর্কিড প্রিজারভেশনের পর আর তেমন কোন কাজ করিনি। আর আমার লেভেল ৮ সিকুরিটি ক্লিয়ারেন্স তো রিনিউ করা হয়নি।

আসাদ : আপনার সিকুরিটি ক্লিয়ারেন্স আপগ্রেড করে লেভেল ৯ করা হয়েছে, আপনার একটু জরুরী ভিত্তিতে আমার সাথে যেতে হবে।

ড: রাশেদ: আমি ধারনা করছি আপনাকে কারন জিজ্ঞেস করে লাভ হবেনা। লেভেল ৯ যেহেতু, আমাকে অফিশিয়ালি ব্রিফ করার আগে কিছুই বলবেনা কেও।

আসাদ: জ্বী।

ড: রাশেদ: কতক্ষনের জন্য যেতে হবে সেটা বলেন, আমি সেভাবে প্যাকিং করি।

আসাদ: সেটাও বলতে পারবো না, আপনার কিছু নেয়ার দরকার নেই, কিছু লাগলে আমাদের বলবেন, আমরা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবো।

ড:রাশেদ: ঠিক আছে, কফিটা খেয়ে যাই।

আসাদ: জ্বী আচ্ছা।

ডক্টর রাশেদ তার পোর্টেবল ল্যাব কিট নিয়ে ড্রেস পাল্টে শুধু একটা এক্সট্রা লুংগি নিয়ে প্রস্তুত হয়ে গেলেন। বাসার বাইরে বের হয়ে দেখেন রাস্তার মাঝখানে একটা মিলিটারী হেলিকাপ্টার। সেটাতে করে তাকে প্রথমে নিয়া যাওয়া হলো ঢাকা ক্যন্টনমেন্টে। সেখানে গিয়ে দেখেন তার কলেজকালীন বন্ধু, ফিজিক্স প্রোফেসর ডক্টর ইকবাল, আর ঢাকা ইউনিভার্সিটির ম্যথ ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান ডক্টর শারমিন কেও ডেকে আনা হয়েছে। তাদের নিয়ে আবার বড় একটা আর্মি হেলিকাপ্টার রাজশাহীর আদমজী জুটমিলে গিয়ে ল্যন্ড করলো।

এবার ডক্টর রাশেদের একটু টেনশন হলো, আর্মি তাদের নিয়ে একটা বন্ধ পড়ে থাকা জুটমিলে কেন আসলো, মেরে টেরে ফেলবে না তো আবার। কিন্তু বন্ধ জুটমিল হিসেবে যায়গাটা অনেক পরিপাটি। তাদের হেলিকাপ্টারের সাথেই আরো দুইটা হেলিকাপ্টার ল্যন্ড করলো। এরপর তাদের মেইন মিলের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হলো। পাটকলের সব মেশিন বের করে ছোটখাটো আর্মি বেস তৈরী করা ভিতরে। তারা এসে দাড়ালো একটা বড় লিফটের সামনে। সবাই লিফটে উঠার পর লিফট নীচে নামতে শুরু করলো।

সাথে থাকা আর্মি অফিসার বললো, ওয়েলকাম টু বাংকার ৭১। এই বাংকারের কথা লেভেল ৯ ক্লিয়ারেন্সের নীচে কেও জানেনা। আপনাদের মাটির ৪০০ মিটার নীচে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই বাংকারের নিজস্ব আর্টিফিশিয়াল এটমস্ফিয়ার আছে। প্রথম প্রথম নিশ্বাস নিতে সমস্যঅ হতে পারে, কিন্তু আস্তে আস্তে এডজাস্ট হয়ে যাবে। বড় সাইজের নিউক্লিয়ার ব্লাস্ট হলেও এই বাংকারের কোন ক্ষতি হবেনা।

ডক্টর রাশেদের মনে কেন যেন এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করতে শুরু করলো। আশেপাশে অন্যদের দিকে তাকিয়ে তাদের চেহারাতেও দুশ্চিন্তা দেখতে পেলেন।

লিফট দিয়ে নেমে তাদের একটা বড় হলরুমে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে তিন বাহিনীর প্রধান, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বসে কি যেন একটা নিয়ে আলোআনা করছে। তাদের তিনজনকে দেখে প্রধানমন্ত্রী বললেন: বসুন। এভাবে আপনাদের ডেকে আনার জন্য দুক্ষিত। কিন্তু পরিস্থিতিটাই এমন।

এরপর এয়ার ফোর্সের প্রধান কথা বলতে শুরু করলেন, “গত বুধবারে বঙ্গবন্ধু স্যটেলাইট-৪১ পৃথিবীর আউটার অরবিটের কাছাকাছি একটি বেশ বড় সাইজের মিটিওরাইটের উপস্থিতি ডিটেক্ট করে”, মিটিওরাইট টি অসম্ভব রকম বড ছিলো আর গতিপথও অদ্ভুত ছিলো, কিন্তু আমরা হিসেব করে দেখছিলাম এটা পৃথিবীর পাশ দিয়ে সরে যাবে। কিন্তু হঠাত করেই কোর্স পরিবর্তন করে এটা পৃথিবীর দিকে আসতে শুরু করে, এবং আমাদের হিসাব করা স্পিডের কয়েকগুন বেশী স্পিডে আসতে শুরু করে। আমরা ভেবেছিলাম, এটার ইমপ্যক্টে আমরা সিলেট বিভাগ পুরোটা হারিয়ে ফেলবো। কিন্তু আমরা কোন বিস্ফোরন টের পেলাম না। এমনকি স্যটেলাইট দিয়ে দেখে ইমপ্যক্ট সাইটে কোন ক্রেটারও পেলাম না। আর্মি আর এয়ার ফোর্সের দুইটা ইউনিট পাঠানো হয়েছিলো পসিবল ইমপ্যক্ট সাইটে। এরিয়াতে ঢোকার পর থেকে তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

ড: রাশেদ: সেটা তো ৫ দিন আগের কথা?

সেনাবাহিনী প্রধান: হুম। এর পর আমরা ২৪ ঘন্টা তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। না করতে পেরে আরো চারটি টিম পাঠাই। তাদের সাথেও যোগাযোগ হারিয়ে যায়। আমাদের টোটাল ৩ টা মিগ বিমান আর ২ টা হেলিকাপ্টার সহ টোটাল ছয়টা ইউনিট নিখোজ হয়ে যায়। কিন্তু গতকাল…

কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে আবার বলতে থাকেন, গতকাল আমাদের প্রথম ইউনিটের একজন আর পরের ইউনিট গুলোর একজনকে টাংগুয়ার হাওর এলাকা থেকে নৌবাহিনীর একটা ইউনিট উদ্ধার করে। কিন্তু তাদের ঠিক সুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তাদের উদ্ধার করার সময় রেসকিউ টিমের একজনের উপর তাদের একজন হামলা করে। পরে রেসকিউ টীমের সেই সদস্যও তাদের মত অসুস্থ হয়ে যায়।

ড: ইকবাল: কেমন অসুস্থ?

নৌবাহিনী প্রধান: দেখবেন। তার আগে বলি আপনাদের কেন ডাকা। অবশ্য এটা মাননীয় রাষ্ট্রপতি বললে বেশী ভালো হয়।

রাষ্ট্রপতি: আমাদের সবার খুব স্ট্রং ধারনা মিটিওরাইট টা আসলে একটা ইউ এফ ও ছিলো। সেই হিসেবে আমাদের ধারনা এলিয়েন রা আমাদের দেশে ল্যন্ড করেছে। ডক্টর ইকবাল, আপনার ফিজিক্স নিয়ে কাজ আন্তর্যাতিক ভাবে সমাদ্রিত, ইউ এফ ও নিয়ে আমাদের যত ডাটা আছে, আমাদের সব স্যটেলাইট, গ্রাউন্ড স্টেশন, টেলিস্কোপ থেকে কালেক্ট করা সব ডাটা আপনার জন্য কালেক্ট করা হয়েছে। আপনার দায়িত্ব এই ডাটা এনালাইজ করা, আর সেই স্পেসশিপের ব্যপারে যতটুকু সম্ভব জানতে চেষ্টা করা।

ডক্টর শারমিন, আপনার বই “ম্যথ এজ এ ল্যংগুয়েজ” দেশে বিদেশের ইউনিভার্সিটিতে পড়ানো হয়।আপনার থিউরি অনুযায়ী ম্যাথ ইউনিভার্সাল ল্যংগুয়েজ, যেকোন জাতি, যেকোন স্পিসিসের ম্যাথের একটা ভার্শন আছে।  এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য আপনি একটা ফ্রেমওয়ার্ক ডিজাইন করবেন। নাসা থেকে গতকাল দুটো টীম বাংলাদেশে এসেছে, আপনারা দুইজন তাদের সাথে কাজ করবেন। মনে রাখবেন “দিস অপারেশন ইজ আওয়ার্স” নাসার সাথে কাজ করলেও দুইটি টীম আপনারা নিজেরা লিড করবেন আর সরাসরি রিপোর্ট করবেন আমার কাছে।
ডক্টর রাশেদ, কেমন আছেন? ডক্টর রাশেদ মনে মনে কি যেন ভাবছিলেন, হঠাত ডাক শুনে চমকে উঠলেন।

ডক্টর রাশেদ: জ্বী হালকা চিন্তিত।

রাষ্ট্রপতি: দু:চিন্তা করার সময় নেই ডক্টর, আপনার দায়িত্ব উদ্ধার হওযা তিনজনকে স্টাডি করা।  তাদের অসুস্থতার ধরন, কারন বের করা, আর এর একটা নিরাময় খুজে বের করা। যদি এলিয়েন হয় তবে, এলিয়েনরা তাদের শরীরে কি ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে, এই পরিবর্তন রিভার্স করা যায় কিনা সেটা স্টাডি করবেন। আমি জানি আপনি টীমওয়ার্ক পছন্দ করেন না তারপরেও আর্মির বায়োটেক ল্যবের একটি টীম আপনার সাহায্যের জন্য রেডী থাকবে। দরকার হলে শুধু ডাকলেই হবে।

আপনার সাবজেক্ট তিনজনকে এয়ারটাইট স্ট্রং কাচের ঘরে রাখা হয়েছে। দেখতে চান এখনই?

ড: রাশেদ: জ্বী।

একটা লম্বা করিডোর ধরে হেটে সবাই একটা ধবধবে সাদা ল্যাবরুমে গেল। সেখানে তিনটা কাচের ঘরে তিনজন লোক দাড়িয়ে আছে। দুর থেকে দেখলে মনে হয় সাধারন সুস্থ মানুষ। কাছে যাওয়ার পর বুঝতে পারা যায় কিছু একটা ঠিক নাই। সবার চুল অদ্ভুত রকম সবুজ। চোখের পলক পড়ছে না। শরীরটা কিছুক্ষন পর পর হালকা করে কেপে উঠছে। পাশেই ল্যব কোর্ট পড়ে থাকা একজন বললো, আসার পর তারা কোন ধরনের খাবার খায়নি। সারাদিন এভাবে দাড়িয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ গ্রাম করে  ওজন কমে যাচ্ছে সবার। যেন ভিতর থেকে কিছু একটা খেয়ে ফেলছে তাদের। প্রথম প্রথম ছটফট করতো, মানুষ দেখলে দৌড়ে আসতো এটাক করতে তারপর যখন কাচের ব্যপারটা বুঝতে পেরেছে, এখন শুধু দাড়িয়ে থাকে।

ডক্টর ইকবাল এই দৃশ্য বেশীক্ষন সহ্য না করতে পেরে বের হয়ে গেলেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন, আপনারা কিছুক্ষন রেস্ট নেন। তারপর কাজ শুরু করেন। আসাদ আপনাদের খোজ খবর নিবে আর আমাকে রিপোর্ট করবে। কিছু দরকার হলে আসাদকে জানাবেন। দেশের ভবিষ্যত আপনাদের উপর নির্ভর করছে।

ড: রাশেদ বললেন, রেস্ট পরে নেয়া যাবে, আমি এখনই শুরু করতে চাই। বলে কাধ থেকে ব্যাগটা নামিয়ে ব্যাগ থেকে তার পছন্দের অডিও রেকর্ডারটা বের করলেন, সাথে তার প্রিয় ডায়েরীটাও বের করলেন।

প্রথম কাচের ঘরের সামনে লেখা:

সাবজেক্ট ০১:

কমান্ডার আসিফ

বাংলাদেশ নেভী

এক্সপোজার পিরিয়ড: ১ দিন

দ্বিতীয় ঘরের সামনে লেখা:

সাবজেক্ট ০২:

ফ্লাইট লৈফট্যানেন্ট নুর

বি এ এফ

এক্সপোজার পিরিয়ড: ৩ দিন (আনুমানিক)

শেষ ঘরের সামনে লেখা:

সাবজেক্ট ০৩:

ক্যপ্টেন মুস্তাফিজ

বাংলাদেশ আর্মি

এক্সপোজার পিরিয়ড: ৬ দিন (আনুমানিক)

ডক্টর রাশেদ তার ডিক্টাফোনের রেকর্ডার অন করে রেকর্ড করা শুরু করলেন: “সাবজেক্টস ঘুমায় না, খায়না। সারাদিন দাড়িয়ে থাকে। সবার চুল অদ্ভুত রকম সবুজ। দাড়ি মোছ, গায়ের লোম এমনকি পিউবস ও সবুজ, তাও হালকা সবুজ না, চোখে পড়ার মত শাইনি সবুজ। তাদের ফিজিওলজি বুঝার জন্য কালকে আমার কিছু এক্সপেরিমেন্ট করতে হবে।  আরো ইম্পরট্যন্ট ব্যপার হচ্ছে। প্রতিটা সাবজেক্ট দিনে ৪০০ গ্রাম করে ওজন হারাচ্ছে, আমার ধারনা তাদের যেটাই এটাক করুক সেটা জিবীত, কিছুটা ভাইরাস অথবা ব্যকটেরিয়ার মত পরজিবী, তাদের শরীর থেকে প্রতিদিন ৪০০ গ্রাম করে খেয়ে বেচে আছে”

ডক্টর রাশেদ সারাদিন ল্যাবেই কাটালেন, রাতে ঘন্টাখানেক ব্রেক নিয়ে কাজ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লেন।  

সকাল বেলা আবার গবেষনা শুরু করলেন, রেকর্ডার অন করে প্রথম সাবজেক্টের কাছে গিয়ে রেকর্ড করতে শুরু করলেন:  

সাবজেক্ট ১: এক্সপোজার টাইম ২ দিন। চুলের রং আগের মতই সবুজ, আজকে থেকে গায়ের রং হলুদ হতে শুরু করেছে। চোখের আইরিশও সবুজ হওয়া শুরু করেছে। আগের থেকে নড়ে ওঠার ফ্রিকুয়েন্সি বেড়ে গেছে। আগে দুই মিনিটে একবার নড়ে উঠতো, এখন প্রতি ৪৫ সেকেন্ডে একবার নড়ে উঠে। নড়ে উঠার ব্যপারটা খুব কনসিস্টেন্ট। একমাত্র এই সাবজেক্টের সঠিক এক্সপোজার ডেট আমাদের জানা। এই সাবজেক্ট থেকে হয়ত সঠিক টাইমলাইন পাওয়া যাবে।

সাবজেক্ট ২: এক্সপোজার আনুমানিক ৪ দিন। চোখ প্রায় সবুজ হয়ে গেছে, গায়ের চামড়াও প্রায় সবুজ হয়ে গেছে। প্রতি ৩০ সেকেন্ড পর পর নড়ে উঠছে ।স্টপওয়াচ দিয়ে টাইমিং করে দেখেছি, খুব কনসিস্টেন্ট। গায়ের চামড়ার রং পরিবর্তনের পাশাপাশি চামড়া শুকিয়ে কুকড়ে যাওয়া শুরু করেছে। গতকাল থেকে আজকে ওজনের তারতম্য ৪১৫ গ্রাম ৫৫ মিলিগ্রাম।

সাবজেক্ট ৩: এক্সপোজার আনুমানিক এক সপ্তাহ। চুলের রং এখনো সবুজ, তবে শাইন নাই আর এতটা। চামড়ার রং, আইরিশের রং সবুজ থেকে নীল হতে শুরু করেছে। প্রতি ৫ সেকেন্ড পর নড়ে উঠছে। খুব কনসিস্টেন্ট। চামড়া কুচকে গেছে পুরোটাই, হাড্ডিসার হয়ে গেছে আরো একদিন গেলে মনে হয়না দাড়ানোর মত ব্যলেন্স রাখতে পারবে।

ওভারঅল আমি কনভিন্সড, তাদের শরীরে কোন একটা এলিয়েন পরজিবী আক্রমন করেছে। কোন টাইপ সেটা এখনো জানতে পারিনি। সাবজেক্ট ৩ মনে হয় খুব বেশী দিন বাচবে না।

ডক্টর রাশেদ ল্যবের ডেস্কেই ঘুমিয়ে গেলেন।

তৃতীয় দিন: ডক্টর রাশের সকালে হাল্কা নাস্তা করেই কাজে লেগে পড়লেন। তার মনটা আজকে ভালো না। তিনি রেকর্ডার অন করে রেকর্ড করতে লাগলেন:

ডে থ্রি,

সাবজেক্ট ১ এর চামড়ার রং এখন সবুজ, সাবজেক্ট ২ এর চামড়ার রং নীল। তার মানে টাইমলাইন হিসাব করলে এই এটাক করলে চামড়া আস্তে আস্তে হলুদ থেকে সবুজ সবুজ থেকে নীল হয়ে যায়। নীল হওয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে খুব সম্ভবত হোস্ট মারা যায়, স্যম্পল সাইজ কম, তাই এইটা কনফার্মড না। আমার ধারনা মাত্র। গতকাল করা ব্রেইন স্ক্যানের রেজাল্ট আসছে। তাদের ব্রেইন অসম্ভব একটিভ। আর ই এম স্লিপ মানে স্বপ্ন দেখার সময়য়ের ব্রেইন একটিভিটির সাথে তাদের ব্রেইন একটিভিটির অনেক মিল। মনে হচ্ছে তারা স্বপ্ন দেখছে। এমনকি তাদের শরীরে ডোপামিন, অক্সিটোসিন, সেরাটোনিন, এড্রেনালিনের পরিমানও অনেক বেশী।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ব্রেইন এক্টিভিটি এত বেশী কেন?

ডে ফোর:

সাবজেক্ট ৩ আজকে নড়াচড়া করছে না, খুব সম্ভবত মারা গেছে। সাবজেক্ট ২ এর অবস্থাও আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই কয়দিন আমার গবেষনা খুব বেশী সামনে আগায়নি, আর হয়ত তাই সাবজেক্ট ৩ মারা গেল। হয়ত সাবজেক্ট ২ ও মারা যাবে আর আমি কিছুই করতে পারবোনা। কাচের ঘরের ভিতরে রোবট দিয়ে গবেষনা করাটা কঠিন আর বিরক্তিকর। রিস্ক ফ্যক্টর এত হাই, অন্য কোন অপশনও নাই। বাল।

…. ওয়েট, এটা কি?

সাবজেক্ট ৩ এর শরীর থেকে রক্তের মত কি যেন বের হচ্ছে, কিন্তু লাল না ,সবুজ। সাবজেক্ট ৩ এ চুলের রংয়ের সবুজ ভাবটা চলে গেছে। রক্তের মত সবুজ জিনিসটা মনে হচ্ছে এক যায়গায় জমা হচ্ছে, মনে হচ্ছে পুরও জিনিসটা একটা জিবীত! এখন পুরো ঘর দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে খুব সম্ভবত বের হওয়ার রাস্তা খুজছে। ফ্যাসিনেটিং! "

সেই রাতে ডক্টর রাশেদ ঘুমাতে পারলেন না। অবাক চোখে সাবজেক্ট ৩ এর ঘরের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। মাটিতে সাবজেক্ট ৩ এর হাড্ডিসার দেহ পড়ে আছে আর ঘর দিয়ে সবুজ এলিয়েনটা ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাঝ রাতের দিলে এলিয়েন প্রানীটার নড়াচড়া কমে গেল। দেখে মনে হচ্ছে নিজের শেপ ধরে রাখতেও সমস্যা হচ্ছে। ডক্টর রাশেদ বুঝলেন এলিয়েন খাওয়ার জন্য কিছু পাচ্ছে না। তার টেস্ট সাবজেক্ট মারা যাবে এটা ভেবে উনি ৪০০ গ্রাম কাচা গরুর মাংস আনালেন, এর পর ঘরে পৌছে দেয়ার ব্যস্থা করলেন। এলিয়েন পরজিবীটা মাংস ঘিরে নিলো, কিছুক্ষন পর মাংসটি অদৃশ্য হয়ে গেল। কিন্তু এলিয়েন পরজিবী প্রানীটা আবার ছটফট শুরু করলো না। এক যায়গায় চুপচাপ স্থির থাকলো।

এবার ডক্টর রাশের ঘরের কাচের কাছে গেল। ইন্টারকম অন করে বললো, তুমি কি আমার কথা বু্ঝতে পারো?

ডক্টর রাশেদ নিজের মনে মনে লজ্জা পেলেন, কতটা নাইভ চিন্তা তার, এলিয়েন কিভাবে তার কথা বুঝবে। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে এলিয়েন নিজের শরীর হা সুচক ভাবে নাড়ালো। ডক্টর রাশেদ নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। উনি ইন্টারকম অন করে আবার বললেন, তুমি কি আসলেই আমার কথা বুঝতে পারছো?

এলিয়েন পরজিবী আবার হা সুচক ভাবে নড়লো।

ডক্টর রাশেদ এবার এক্সাইটেড হয়ে জিজ্ঞেস করলো, তুমি বাংলা শিখলে কিভাবে?? এলিয়েন পরজিবী, সাবজেক্ট ৩ এর হাড্ডিসার দেহের দিকে ইংগিত করলো।

ডক্টর রাশেদ ব্যপারটা বিশ্বাস করতে পারছে না! উনি এর পর এলিয়েনের সাথে কথা বলার জন্য একটা ভাষা ঠিক করে দিলেন। আর একের পর এক প্রশ্ন করতে লাগলেন। উনি রেগুলার ৪০০ গ্রাম খাবারও সাপ্লাই করতে শুরু করলেন এলিয়েন কে। এলিয়েন প্রানীটি বেশীভাগ প্রশ্নের জবাব হ্যা অথবা না তে দেয়। এক পর্যায়ে ডক্টর রাশেদ তাকে বললো। মানুষ শান্তি প্রিয় প্রানী, আমরা সবার সাথে মিলে মিশে থাকি, আমরা কনফ্লিক্ট চাইনা শান্তি চাই, তুমি কি আমার বন্ধু হবে?

এলিয়েন পরজিবী হ্যা সুচক ভাবে নড়লো।

ঠিক আছে, তোমার নাম আজ থেকে দিলাম সিম্বি, তোমার নামটা কি পছন্দ হয়েছে?

সিম্বি হ্য সুচক ভাবে নড়লো।

এরপর ডক্টর রাশেদ জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি আমাকে বলতে পারবে কিভাবে আমি তোমার অর্গানিজমের এটাক থেকে মানুষদের বাচাতে পারি? সার্ভাইভাল আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ন। আমি কথা দিচ্ছি মানুষ না মেরে তোমাদের বাচার ব্যবস্থা আমি করে দেবো।

সিম্বি কিছুক্ষন কোন নড়াচড়া করলো না, এর পর ঘরের লকের দিকে ইশারা করলো।

ডক্টর রাশেদ তাকে জিজ্ঞেস করলো: তোমাকে বন্দী দশা থেকে মুক্ত করলে আমাকে বলবে?

সিম্বি হ্য সুচক ভাবে নড়লো।

তোমাকে মুক্ত করলে তুমি আমাকে আক্রমন করবে না তো?

সিম্বি না সুচক ভাবে নড়লো।

ডক্টর রাশেদ এখন বেশ রিস্কি সিচুয়েনে পড়ে গেল। উনি কিভাবে একটা এলিয়েন পরজিবীকে বিশ্বাস করবে বুঝে উঠতে পারছিলো না। কাউকে যে বলবে সেটাও বলার সাহস হচ্ছিলো না। উনি মনে মনে ভাবলেন। এই এ্যলিয়েনকে উনি বিপদের সময় খাবার দিয়েছেন, অবিষ্যতেও দিবেন এমনটা নিশ্চিত করতে পারলে তাকে বা অন্যকে আক্রমন করার কথা না।

ডক্টর রাশেদ সিম্বির কাছে গিয়ে আবার বললো, আমাকে কথা দাও, তুমি আমার অথবা এই ফ্যাসিলিরির অন্য কারো ক্ষতি করবে না।


সিম্বি হ্যা সুচক ভাবে নড়লো।

উনি আস্তে করে গেটের দিকে এগিয়ে গেলেন। চোখ বন্ধ করে আরেকবার ভাবলেন, তারপর নিজের স্পেশাল ওভাররাইড কোড দিয়ে গেট আনলক করে দিলেন। সিম্বি তার দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসলো, ডক্টর রাশেদের মনে হতে শুরু করলো উনি বড় একটা ভুল করে ফেলেছেন। মাথাটা ভারী হয়ে আসছিলো টেনশনে। কিন্তু সিম্বি তাকে এটাক করলো না। তার সামনে এসে স্থির হয়ে গেল।

ডক্টর রাশেদ বললো, এখন আমাকে সাহায্য করো, তোমার জিন স্যম্পল দরকার আমার। সিম্বি তার শরীরের একটা অংশ ডক্টর রাশেদের মাইক্রোসকোপের দিয়ে এগিয়ে দিলো আর স্লাইডের উপর তার শরীর থেকে এল ফোটা স্যম্পল দিলো।

ডক্টর রাশেদ মাইক্রোস্কোপের দিকে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে কাজ শুরু করে দিলো। কাজের মধ্যে নিজের রেকর্ডার বের করে আবার রেকর্ড করা শুরু করলো:

“আজকে আমি এলিয়েন অর্গানিজমটাকে মুক্ত করে দিলাম। ভয় লাগছিলো, অনেক রিস্কি ছিলো, কিন্তু তারপরেও রিস্ক নিলাম, আমাকে ও এটাক করেনি। ও আমার বন্ধুর মত হয়ে গেছে। আমি ওর নাম দিয়েছি সিম্বি, সিম্বিওড থেকে সিম্বি । সিম্বির জিন স্যম্পল দেখে যা বুঝলাম, সিম্বি অনকগুলো এককোষী প্রানীর কম্বিনেশন। একসাথে তারা একটা সিংগেল প্রানীর মত আচরন করে। ওয়ান সিংগেল হাইভ! ইন্টারেস্টিং! সিম্বির জিন পৃথিবীর অন্যান্য প্রানীর জিন থেকে আলাদা। তাকে ।সরি তাদেরকে‌। আমি কোন ক্যাটাগরীতে ফেলতে পারিনি। ভাইরাসের মতও না, আবার ব্যকটেরিয়ার মতও না। এমনকি পুরোপুরি ফাংগাস ও না। অদ্ভুত একটা স্ট্রাকচার।”

“সিম্বির স্যম্পল দেয়ার পর টানা তিন দিন জিনোম সিকুয়েন্সিং নিয়ে কাজ করছি। তিনটা দিন কিভাবে পার হয়ে গেল টেরই পেলাম না। সারাদিন কাজ করি, রেস্ট নেয়ার সময় নাই। সারাদিন খাওয়া ঘুমানো ছেড়ে দিয়ে বার বার পিসিআর চালাই। মাইক্রোস্কোপে চোখ দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকি। সিম্বিও মনে হয় মজা পাচ্ছে আমার কাজ করা দেখে। সারাদিন আমার চেয়ারের পাশেই দাড়ায়ে থাকে। অবশ্য সিম্বির পার্সপেকটিভে সেটা দাড়ানো কিনা জানিনা। তারাতাড়ি সিম্বির জিনোম সিকুয়েন্স করা দরকার। একবার হয়ে গেলে ইউনিক পার্ট টা টার্গেট করে একটা এম আর এন এ ডিজাইন করতে হবে। তারপর সেটা যত দ্রুত সম্ভব ভ্যকসিন হিসেবে ডিস্ট্রিবিউট করতে হবে। সাবজেক্ট ১ আর সাবজেক্ট ২ এখনো বেচে আছে, দেখে মনে হচ্ছে আগের থেকে তাদের অবস্থা উন্নতি হচ্ছে। হয়ত সিম্বি তাদের ভিতরের সিম্বিওডের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সুস্থ রাখতে বলেছে। এমনটা হলে তো তাদের সিম্বিওডের জন্যও ৪০০ গ্রাম করে খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে, নাহলে আবার হোস্টদের খাওয়া শুরু করে দিবে। আচ্ছা সিম্বিকেও তো গত তিনদিন খাবার দেয়া হলো না! খুব সম্ভবত আমার মত এক্সাইটেড হয়ে খাওয়ার কথা ভুলে গেছে।”

“সিম্বিকে মুক্ত করার আজকে সপ্তম দিন। জিনোম সিকুনেন্স করে ডি এন এ প্রিন্টারের প্রিন্ট করে সেটা দিয়ে এম আর এন এ ভ্যকসিন তৈরী করে ওপেনসোর্স করে দিয়েছি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কোম্পানি এখন এই ভ্যকসিন তৈরী করছে। গরীব দেশের মানুষরা ফ্রিতে ভ্যকসিন পাবে। আর কোন মানুষ এলিয়েন সিম্বিওডের এটাকে মারা যাবেনা। ইশ! ইচ্ছা করছে এই আনন্দটা বাংকারের সবার সাথে শেয়ার করি। কিন্তু সবাই প্রচুর ব্যস্ত। সপ্তাহ খানেক হলো কাউকেই দেখিনা। খুব সম্ভবত ভ্যকসিন ডিস্ট্রিবিউট, আর এলিয়েন দের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সবাই ব্যাস্ত। আমার তেমন সমস্যা নাই। আমার আনন্দ ভাগ করে নেয়ার জন্য সিম্বি আছে। এই লিকুইড প্রানিটার সাথে আমার এত সুন্দর বন্ধুত্বের কারনেই এতকিছু সম্ভব হলো। সিম্বির দিকে তাকিয়ে ডক্টর রাশেদের চোখে পানি চলে এল।

টকটকে নীল চোখ দিয়ে সেই পানি নীল গাল গড়িয়ে সবুজ দাড়ি ভিজিয়ে দিলো। ডক্টর রাশেদের শরীরটা হাল্কা কেপে উঠলো।